বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩২ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
দেশের প্রখ্যাত আলেম জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর, জামেয়া আরাবিয়া উমেদনগর টাইটেল মাদ্রাসা হবিগঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদীস এবং সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জামেয়া তোয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার শায়খুল হাদীস আল্লামা হাফেজ তাফাজ্জুল হক মুহাদ্দিসে হবিগঞ্জীর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় তার নিজ প্রতিষ্ঠিত হবিগঞ্জের উমেদনগরে জামেয়া আরাবিয়া উমেদনগর টাইটেল মাদ্রাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রখ্যাত শায়খুল হাদীস আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জীর জানাযায় লাখো জনতার ঢল নেমেছিল। জানাযার ইমামতি করেন হযরতের বড় পুত্র হাফিজ মাওলানা মছরুরুল হক। পরে তাকে শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মসজিদের পাশে মাদ্রাসার ফুল বাগানের শায়িত করা হয়। জানাজায় অংশ নিতে তার প্রিয় ছাত্র জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর আল্লামা নুর হোসাইন ক্বাসেমী ও মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী রাত ৩টায় হবিগঞ্জে এসে পৌছেন।
জানাজায় অংশ নিতে ও তাকে শেষ বারের মতো একনজর দেখতে রোবরার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও ছাত্রশিক্ষক বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সহ শীর্ষ উলামায়ে কেরাম হবিগঞ্জের উমেদনগরে আসতে থাকেন। জানাযায় নির্ধারিত মাঠ পেপেরিয়ে মাদরাসা মাঠ-বিল্ডিং, আশপাশের মার্কেট ও বাড়ির বিল্ডিং, ক্ষেতের জমি, দু’পাশের সড়কেও পেরিয়ে যায়।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি আল্লামা শায়খ আব্দুল মোমিন শায়খে ইমামবাড়ি, মহাসচিব আল্লামা নুর হোসাইন ক্বাসেমী, আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশ (ক্বওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের) সভাপতি আল্লামা শায়খ জিয়া উদ্দিন অসুস্থ থাকার কারনে তার পক্ষে সহমর্মিতা প্রকাশ করেন সিলেট জেলা জমিয়তের যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা নজরুল ইসলাম, জমিয়তের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, সাবেক এমপি এডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গৌছ, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান, জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বিবাড়িয়া, আল্লামা নুর ইসলাম খান সুনামগঞ্জী, মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক পীর সাহেব বরুণা, মাওলানা শায়খ আব্দুশ শহীদ গলমুকাপনী, জমিয়তের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ মাওলানা নাজমুল হাসান, প্রিন্সিপাল মাওলানা শোয়াইব আহমদ, হবিগঞ্জ জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মুফতি সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী, রেঙ্গা মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মুহিউল ইসলাম বোরহান, আযাদ দ্বীনি এদ্বারায় বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শায়খ আব্দুল বছির, সিলেট মহানগর জমিয়তের সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, ইউকে জমিয়তের সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শোয়াইব, শায়খ খলিলুর রহমান হামিদী পীর সাহেব বরুণা, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা মখলিছুর রহমান, সিলেটের গহরপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন রাজু, পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মরহুমের ৩য় ছেলে যুব জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফিজ মাওলানা তাহফীমূল হক, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, সাধারণ সম্পাদক মুফতি ফয়জুল্লাহ, ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি আবুল হাসনাত আমিনীসহ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, জমিয়ত, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী ঐক্যজোট সহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
জানাজায় মরহুমের স্মৃতিচারণ করে অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বক্তারা বলেন, আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জীর মৃত্যুতে জাতির যে ক্ষতি হয়েছে তা সহজে পূর্ণ হবার নয়। বক্তারা বলেন, আমরা এক মূল্যবান রাহবার ও ছায়াস্থলকে হারালাম। দেশ, জাতি ও উম্মাহর যেকোন দুর্দিনে তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও পথনির্দেশনা ছিল আমাদের জন্য অমূল্য সম্পদ।
বক্তারা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।